11-04-2022
ইফতারের পর নিরালার মোড়ে সিডিসি মার্কেটের আন্ডারগ্রাউন্ড গ্যারেজে যাই। এই গ্যারেজের নিরাপত্তা প্রহরী আমার ফুফাতো শ্যালক মোজাম্মেল। উনি গ্যারেজের ফ্লোরে কার্টন বিছিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আমিও সুযোগটা নিলাম। কতক্ষণ তার সাথে শুয়ে গল্পগুজব করে বাসায় ফিরলাম। বলে রাখি সময়ের পরিক্রমায় পুঁজিতান্ত্রিক সমাজের অসম বিকাশের কারণে পরিবার ও আত্মীয়-পরিজনের মধ্যেও অসম বিকাশের কারণে মেলামেশাতেও একটা বিভাজন রেখা চলে আসে। উচ্চবর্গীয়রা অর্থাৎ ডিনার-ডলার-পয়সাতন্ত্রের দাস যারা তারা চলে একদলে ও আয়ে নিম্নবর্গীয়রা চলে আর এক দলে। আমি দার্শনিকভাবে এবং অর্থনৈতিকভাবেও গরীব মেহনতীদের অর্থাৎ মজলুমদের কাতারে। আমার তাই চলাফেরা মোজাম্মেলের মত আত্মীয-স্বজন বন্ধুবান্ধবদের সাথে। আমার একমা্ত্র ও বড়পুত্র আমাকে জাতে তোলার জন্য অনেক কিছু কিনে দেয়, স্ত্রীসহ সবার তাগিদ পরিপাটিভাবে চলার জন্য, কিন্তু স্বভাব কী আর সহজে পাল্টায়। ছেলে অনেকদিন আগে বলেছিল আমার মান-ইজ্জত তুমি রাখলে না। গিন্নি বলে বাইসাইকেল চালিয়ে আর কত ছোট করবে আমাদের। বিভিন্ন কলেজের দু-একজন অধ্যাপকও বলেছেন আপনি সাইকেল চালাবেন না। আমার পুত্রের আইডল তাঁর ব্যবসায়ী কাম চাকুরিজীবি মামা, এটা বোঝা যায় ওর চলন-বলনের থেকেও। ঈশ্বরচন্দ্রবিদ্যাসাগর-মার্কস এদের আইডল নয়, কাজেই পিতার আদর্শ অপাংক্তেয়, মামাই আইডল। ছেলেকে অচেনা মনে হয়, মানসিক সন্তান বলতে যা বোঝায় অর্থাৎ soul child মনে হয় না। তারপরেও ওদের জীবন ওদের মত করে চলবে, কাহলিল জীবরানের কথা মনে পড়ছে, তোমাদের সন্তান তোমাদের নয় তারা জীবনের সন্তান।

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন