রাসায়নিক বিক্রিয়ার সমতাকরণ স ম আজাদ
রাসায়নিক বিক্রিয়ার সমতাকরণ
রাসায়ানিক
বিক্রিয়াতে জড়িত থাকে নানা ধরনের পদার্থ প্রস্তুত করতে যৌগসমূহে উপস্থিত মৌলগুলোর পুনর্বিন্যাস। বিক্রিয়াকে লেখা হয় সাধারণত বিক্রিয়কগুলোর সমষ্টি হিসেবে, যখন বিক্রিয়কগুলো সংযুক্ত হয়ে কতগুলো উৎপাদ তৈরী করে।
A + B → C + D
এখানে, A, B, C ও D উপস্থাপিত হয় রাসায়নিক যৌগ হিসেবে। ভর সংরক্ষণ নীতি দিয়ে রাসায়নিক বিক্রিয়া সমতাকরণের প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়। নীতিটি হলো: রাসায়নিক বিক্রিয়া ভর সৃজন বা ধ্বংস করতে পারে না। এই নীতিটির বেশকিছু প্রভাব আছে যা দিয়ে একটি বিক্রিয়া বৈধ কিনা তা নির্ণয় করা যায়।
১। বিক্রিয়কসমূহের ভর অবশ্যি উৎপাদসমূহের ভরের সমান হতে হবে।
২। বিক্রিয়কে উপস্থিত প্রত্যেকটি মৌলিক পদার্থকে অবশ্যি উৎপাদে থাকতে হবে।
৩। বিক্রিয়কে উপস্থিত প্রত্যেক প্রকারের পরমাণুর সংখ্যা অবশ্যি উৎপাদে উপস্থিত প্রত্যেক প্রকার পরমাণুর সংখ্যার সমান হতে হবে।
উদাহরণ: ইথিলিন ও অক্সিজেন গ্যাস পরস্পরের সঙ্গে বিক্রিয়া করে পানি ও কার্বন ডাইঅক্সাইড তৈরী করে। যদি ৪ মোল অক্সিজেন
গ্যাস দিয়ে শুরু করা হয়, তাহলে কত মোল পানি ও কার্বন ডাইঅক্সাইড তৈরী হয়?
অসমতাকৃত সমীকরণ নিচে দেয়া হলো।
C2H4 + O2 → CO2 + H2O
প্রথমে
আমাদের অবশ্যি বিক্রিয়াটিকে সমতাকৃত করতে হবে। এই টেবিলটি ব্যবহার করে তা করে যেতে পারে।
|
|
C |
H |
O |
C |
H |
O |
|
প্রাথমিক (অসমতাকৃত) |
2 |
4 |
2 |
1 |
2 |
3 |
|
দরকার: জোড় সংখ্যক অক্সিজেন ডান পাশে চেষ্টা করা যাক: 2 × H2O |
2 |
4 |
2 |
1 |
4 |
4 |
|
ডান পাশে জোড় সংখ্যক কার্বন দরকার: চেষ্টা করা যাক: 2 ´ CO2 |
2 |
4 |
2 |
2 |
4 |
6 |
|
বাম পাশে আরো অক্সিজেন দরকার চেষ্টা করা যাক: : 3 ´
O2 |
2 |
4 |
6 |
2 |
4 |
6 |
একবার বিক্রিয়ার উভয় পাশের প্রত্যেকটি মৌলের পরমাণু সংখ্যা সমান হলে আমরা বলতে পারি সমতাকরণ হয়ে গেছে। সমতাকৃত সমীকরণটি হলো:
C2H4 + 3O2 → 2CO2 + 2H2O
প্রত্যেকটা যৌগের সামনে অবস্থিত সহগগুলোর মধ্যে বৃহত্তম উৎপাদক হলো ১, সুতরাং এটিই হলো সরলতম রূপ।
উৎপন্ন দ্রব্যের পরিমাণ (Yield)
একটি
বিক্রিয়ার উৎপাদসমূহের পরিমাণ (yield
of a reaction)
হলো উৎপাদসমূহের সর্বোচ্চ পরিমাণ যা তৈরী করা যায় যোগকৃত বিক্রিয়কগুলো থেকে।
.উদাহরণস্বরূপ, নাইট্রোজেনের (N2) সাথে হাইড্রোজেনের (H2) বিক্রিয়াতে অ্যামোনিয়া (NH3) উৎপন্ন হয়। এই বিক্রিয়াটির জন্য একটি সমতাকৃত সমীকরণ লিখ এবং তোমরা যদি 5 মোল হাইড্রোজেন গ্যাস দিয়ে শুরু কর তাহলে কতটুকু অ্যামোনিয়া গ্যাস তৈরী করা যাবে।
প্রথমে বিক্রিয়াটি
সমতাকৃত করা যাক। আমরা কিছু সহগ দিয়ে চেষ্টা করতে পারি এবং তারা ভর সংরক্ষণের নীতি
সমর্থন করে করে কিনা তা যাচাই করতে পারবো।
N2 + 3H2 → 2NH3
সমতাকৃত সমীকরণ
আমাদের বলে যে প্রত্যেক তিন মোল হাইড্রোজেন গ্যাসের জন্য, আমরা দুই মোল অ্যামোনিয়া
তৈরী করতে পারি।যদি আমরা 5
মোল হাইড্রোজেন গ্যাস দিয়ে শুরু করি, তাহলে কত মোল অ্যামোনিয়া পাবো।
3 মোল হাইড্রোজেন
থেকে পাওয়া যায় 2 মোল অ্যামোনিয়া
5 মোল হাইড্রোজেন
থেকে পাওয়া যায় (2 x 5)/3 মোল অ্যামোনিয়া
= 3.3 মোল অ্যামোনিয়া
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন