উচু-নিচু কাজ ও পরিচয়ের সমস্যা স ম আজাদ
উচু-নিচু কাজ ও পরিচয়ের সমস্যা
স ম আজাদ
পরিচ্ছন্ন কর্মীর কাজ অত্যাবশ্যকীয় । কিন্তু আমরা কি তাঁদের যথাযোগ্য মর্যদা দেই? তাঁদের যথেষ্ট পারিশ্রমিক কি দেই? তাঁদের কর্ম পরিবেশ উন্নত করার জন্য প্রয়োজনীয় অটোমেশন কি জারি আছে? এ রকম অনেক প্রশ্ন উনাদের কেন্দ্র করে। পরিচয়ের সমস্যাও আছে। সমাজের মেইন স্ট্রিমে কি আমরা তাঁদের ঠাই দেই। সেদিন বাসে আমার পাশে বসা যাত্রীর সাথে আলাপ চলা কালে পেশার প্রসঙ্গ আসলো। আমি বললাম আমি ব্ল্যাকবোর্ডে চক ঘষি। ওনি বললেন আামি ছোট কাম করি বলার মত না, ময়লা পরিস্কার করি। আমি বললাম আপনিতো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন। আপনার পেশার কর্মীরা ধর্মঘট করলে শহর-বন্দর বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাবে। ভদ্রলোকেরা অচল হয়ে যাবে। তিনি বললেন রোজগার ভালই করেন দু’টি জায়গা থেকে। কিন্তু ছেলে বলে বাবা তুমি এ কাজ বাদ দাও, আমি সংসার চালাবো, তোমার আর কাজ করতে হবে না। তোমার জন্য পরিচয় দিতে পারি না। উনি বললেন টাঙ্গাইলের বিভিন্ন জায়গায় আমার কার্ড দেয়া আছে। এজন্য ছেলে দূরে গাজীপুরে কাজ করে। আমরা এমন একটা সমাজে বাস করি যেখানে পেশার বৈচিত্রকে পেশার বৈষম্যে রূপান্তরিত করেছি। আামর নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলি। জাপান থেকে ফেরার পর কিছুদিন রসায়নে গবেষণার কাজ করেছি। সাথে সাথে কিছু কিছু্ ও লেভেল এ লেভেলের শিক্ষার্থীকে গৃহশিক্ষক হিসেবে পড়িয়েছি। তো আমার এক পরম আত্মীয় মেঝ সম্বন্ধী আনোয়ার বিন মতিয়ার যিনি এমনিতে অমায়িক, অতিথিপরায়ণ ও পরোপোকারীও। তিনি আামাকে একটি টিউশনি দিলেন। কিন্তু সেখানে দেখা গেল আমাকে নিয়ে তার পরিচয়ের সমস্যা। আমার সাথে তার যে আসল সম্পর্ক সেটি গোপন করে নিছক আমরা পরস্পরেরর পরিচিত এরকম একটা কিছু বলতে বলেছিলেন। যাহোক সেই টিউশনি আমি দু’মাস করেছিলাম। ওনাকে এক বিবাহ অনুষ্ঠানে নিয়ে গিয়েছিলাম। তো সেখানকার খাওয়া-দাওয়া নাকি ওনাদের স্ট্যাটাসের সাথে মেলেনি। ওনি বললেন ঐ পক্ষ ফোন করলে যেন ফোন না ধরি। এভাবে ওনার পদবীপন্থী মনোভাব সংকট সৃষ্টি করেছিল। দেখা যাচ্ছে পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থায় পদ-পদবী অর্থ এগুলো পরিচয়ের ক্ষেত্রে ম্যাটার করে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন