মার্কসের জন্মদিনে আমার শুধু বাংলাদেশের বামপন্থীদের দেওলিয়াত্বের কথাই মনে পড়ে।সারা দুনিয়ার মেহনতি জনগণ এক হও- মার্কস-এঙ্গেলসের এই মহা বয়ানকে তাঁরা খেলো করে ফেলেছেন। ইস্পাত দৃঢ় ঐক্যের পরিবর্তে শুধু বিভক্তি দেখি। কবি শফিক ইমতিয়াজ আশির দশকে জাসদের ভাঙ্গনকে কেন্দ্র করে একটা ছড়া লিখেছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন এ বলে ও ভ্রান্ত পেটিবুর্জোয়া কীট দ্বারা কমবেশী আক্রান্ত। এভাবে এক গ্রুপ অপর গ্রুপকে গালাগালি দেন। আর প্রতিটি ভাঙ্গনে কর্মীরা হতাশ হন, অনেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। তারপর থেকে অনেক বছর গেছে অবস্থার উন্নতি হয় নি। ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছেন বামপন্থীরা। এটা সত্য পুঁজিবাদে মানুষের কষ্ট বাড়বে, বৈষম্য বাড়বে, সম্পদ অল্প মানুষের হাতে কেন্দ্রীভূত হবে। হচ্ছেও তাই। বার্লিন দেয়ালের পতনের পর ফ্রান্সিস ফুকায়মা দম্ভভরে বলেছিলেন ইতিহাসের অবসান, অর্থাৎ পুঁজিতন্ত্র্ই শেষ কথা। কিন্তু বার্লিন দেয়ালের পতনের পরে এই সেদিন তিনি সখেদে বলেছেন নয়াউদারনীতিবাদ সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে। এভাবে চললে সমাজতন্ত্র আবার ফিরে আসবে। কিন্তু কথা হলো সমাজতন্ত্রতো আর এমনি এমনি আসবে না। বামপন্থীদের ইস্পাত দৃঢ় ঐক্য আর জনগণের সাথে কেজো সম্পর্কের ভিত্তিতে আন্দোলন-সংগ্রাম-বিপ্লবের মাধ্যমেই দীর্ঘকাল যাত্রায় তা সম্ভব।যতদিন তা না হবে ততদিন পুঁজিবাদ কেবলি শোষণ করতে থাকবে। আর আমাদের মত সাধারণ দরিদ্র জনগণের দুঃখ দুর্দশা বাড়তেই থাকবে। ব্যক্তি মালিকানার অবসান, সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠা, কারখানাতে শ্রমিক কাউন্সিলের নিয়ন্ত্রণ অর্থাৎ ম্যানেজমেন্ট শ্রমিক কাউন্সিলের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। গ্রামে যৌথ খামার ব্যবস্থা থাকবে। শিক্ষা-চিকিৎসা-আবাসন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে রাষ্ট্রের নিকট থেকে প্রতিটি নাগরিক পাবেন। এই যে স্বপ্ন এর কোন মৃত্যু নেই।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ক্রিস্টাল ফিল্ড তত্ত্ব স ম আজাদ

পরকীকরণ: মার্কসের তত্ত্বের ভূমিকা

রসায়নের প্রকৃতি এরিক শেরি